বেদনার বনলতা সেন পুষে রাখি বেদনার বনলতা সেন—সব হাসি ঝরে পড়ে জীবনের ফাঁসে;একাত্তর যতদূর ফুটেছে আকাশে,মানুষের অনিঃশেষ আশার চরণ—পল্লীর আইল ধরে দূরে দেয় পাড়ি—মায়া ছেড়ে পরদেশে ছবি বাঁধা হাটে,জোছনায় ঝলসিত হৃদয়ের— শাড়ি,ঝুলে আছে লাইনের এপারে-ওপারে। মুক্তির মশাল হাতে যারা একদিন,নির্বাক মিনার জাগে তাঁদের স্মরণেমুছে যায় রক্তদাগ যত নামহীন,অনুভবে ঝরে যায়…
Author: Dichterin
আশরাফ আলীর আর সেই ভাবনাটা নেই। যখন লোহোর দোকানে খাতা দেখার কাজ করত, তখন প্রায়ই মাথা-চাড়া দিত ভাবনাটা। দেবে নাকি দু-চারটে অন্য কথা ঢুকিয়ে! কোম্পানির দু কুইন্টাল আড়াই ইঞ্চি রডের পাশে লিখে দেবে, কাল সকালে অফিসে আসতে একেবারে ভালো লাগেনি? কিংবা লিখে দেবে নাকি আলকাচ মিয়া রোজ দুপুরে যে তরুণী…
ইউনূস আলী মোল্লা হঠাৎ পাটের ব্যবসায় নিজের নাম জৌলুসের সাথে উপার্জন করেছেন কিছু নগদ টাকা। তাই যুদ্ধের খবর শুনে তিনি চিন্তিত, সেই কারণেই গ্রাম ছেড়ে পালানোর একটা উপায় খুঁজতে থাকলেন। রেডিও মারফত খবর পাওয়া গেছে ২৫ তারিখ রাতে ঢাকায় নাকি দলে দলে মানুষ মারা হয়েছে। সেই রাত থেকেই শেখ সাহেবের…
একটি দরজা প্রতিটি দৃশ্য জন্মায় একটি দরজার সামনে কুড়িয়ে নেবে কি নেবে না, ফুলটি জানে না… অগ্রভাগে আগুন চূড়ান্তে পৌঁছাতে সিগারেটের এই পুড়ে যাওয়া মুঠো-আলগা হলেও সব কথা তোমার কাছ পর্যন্ত পৌঁছায় না জানলার পর্দা কাঁপছে অথবা কাঁপছে না দু-পাশে অপেক্ষা, মাঝখানে, দাঁড়িয়ে আছে সময় প্রতিমা আমাদের গাঢ় ঘুম, কারো…
ধূসর উন্মোচন তার সঙ্গে থাকেনির্জনে থাকে না কখনোএকসঙ্গে খায়দায়ঘোরে, অরণ্যে যায়নিশিপাখির মতোএডালে ওডালে ঝোলেলুপ্ত সাধনার পাশেরেলপথ সমানে সমাননিষ্ফলা খেতের মাটিতেপুঁতে রাখে বীজবশীকরণ, সংহারপ্রহেলিকা ধূসর প্রান্তরেমন ডিঙিয়ে ওড়েনবদরজার চৌকাটে, গুঞ্জনেইনবক্সে থেকে থেকেপাখি ডেকে যায় অনেক পথের পাশেগিরগিটি হাঁটে, রঙ পালটায়বাঁশিসুর নিভন্ত আলোর উদ্বোধনেমহাসড়কের মাথায়শান্তস্বভাবে নিশিবেড়ালভ্রমণে গেলেসবুজবাতি জ্বলে আর নেভেনভোবাড়ির ছাদের নিচেমৌন…
১দ্রুত খাতা কাটছিল রুহি।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাসায় ফিরতে হবে। আম্মুর শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। কদিন ধরেই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অত বড় বাড়িতে আম্মু প্রায় একাই পড়ে থাকে। স্বল্প আয়ের কয়েকজন ভাড়াটে বসাতে চেয়েছিল রুহি। সারাক্ষণ লোকজন থাকলে খানিক দেখাশুনা করতে পারবে। আম্মু রাজি হয়নি। ম্লান হেসে আপত্তি জানিয়ে বলেছিল,…
গ্রাউন্ড জিরো ময়েশ্চার কি ভয়ানক দুর্ভাবনায় তারা তাকে খোঁজে জগতের সব রাস্তায়খেলার মাঠ ফুঁড়ে আড়াই মিটার গভীরেকিবরিয়ার রেখার বিমূর্ততায় সে কোথায়সে কোথায় তারা তাকে খোঁজে কবিতার অমায়িক উত্তাপেআকাশের তারাদের জংলায়ভূমিকাসম্বলিত বোসন কণায়একটা বড়সড় পরিবর্তন আসুকএমন ভাবনাও তো কম আতঙ্কজনক না ঐ যে দু’টো বুড়ো ভাঁড় আর কমলালেবুর শ্রীচৈতন্যমাখা হাসিঐ যে…
১দ্বিতীয় লাইনের অপেক্ষায় শেষ হয়প্রথম লাইনশেষ হয় না আসলে অপেক্ষার ভেতর উড়তে থাকাপ্রতিটি আলোকবিন্দুই নিভে যায় ডুবে যেতে যেতেও একজনআঁকড়ে ধরতে চাইছে একটি বিন্দু ২ছাই না-হওয়া পর্যন্তই বেদনা, তারপর স্মৃতিভস্ম… যেকোনো তাসে বাজি ধরার মতো অবলীলায়উড়িয়ে দেয়া যায় তোমাকে আলোকিত করবে বলে চাঁদঅন্যকাউকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়… ৩ক্রমশ ফিকে হয়ে আসা…
মধুগ্রাম পায়ে পায়ে মধু লেগে থাকেরূপপুরের ঘাটে। এ গ্রামে রমণীরাবাঁশফুল খোঁপায় গোঁজে আরমাটি দিয়ে চুল ধুয়ে রাখে!সেই এক প্রাচীন মহুয়াবাগানেঅন্নদাসুন্দরী একা একা হাঁটে। প্রাসাদে পাহারা নেই। প্রজা সবরাজা হয়ে বেচাকেনা করে।দূর ওই মাঠে— আলিফ লাইলারটি-শার্ট পরে কাকতাড়ুয়া হাসে। এ গ্রামে মধু, ঠোঁটে নয়—পায়ে লেগে থাকে! গ্রহণ কত ডাক আসে ঘরে…
অমানুষ এক সার্কাসকর্মীফাঁকা মাঠে তুলেছে একটা ঘরআর চিৎকার করছে… এই ঘরে অমানুষ আছেঅমানুষ আছেঅমানুষ… তাকে কেন্দ্র করে অনেক লোকের ভিড়একে একে ঢুকছে ঘরে সাক্ষাতের জন্য—ফিরছে কালিমুখে সকলেই।কৌতূহলবশত আমিও গেলাম;ফাঁকা ঘরচারপাশে আয়নার দেয়ালআমি— আমারই অবয়ব। মহাজনের ব্লাডব্যাংক সামনে হলুদ ভুঁই— এপাশে পুকুরধার ঘেঁষে মাচায় ফুটে আছে পটল ফুলওপাশে ধান ক্ষেত— একটা…