একগুচ্ছ কবিতা। শৈবাল নূর

0

আত্মীয় ও পরিবারতন্ত্র

অপমান বোধ মরে গেলে জন্ম হয় গাধার
দম্ভদীপ্ত আয়না —
প্রতিকী ফাঁদ তৈরির ছলে
বিকল্প প্রতিবিম্ব ধারণা নির্মাণ করেছে
কুয়োর নিঝুমজলে
পানিপানের সারল্য মোহে
গভীরজল আয়তনে, প্রতিচ্ছবিতে
করুণাহীন জলবন্দি থাকে
গাধার কিঞ্চিৎ কৌতূহল, বস্তুত নিরুপায় ছায়ারূপ

ছুটির দিন

শুক্রবার এলেই কচি নিমপাতার শুশ্রূষা
মিথ্যে হয়ে ঝরে মুখে, আমাদের অতীতে—
নামাজের আগে খুতবার ঘুমো ঘুমো অবচেতনের ভেতর
ব্যক্তির সমস্ত অন্ধকার জুড়ে রেসের ঘোড়া দৌড়ায়
মা কি মৌসুমি ফুল ? ভ্রষ্ট হয় মৃত্তিকায়, বাবার বুকে
ফুলেদের অবকাশ ঝরে যাওয়া নয় তো!

মোক্ষ

বৃষ্টির প্রবাহ থেকে পালিয়েছো তুমি
আক্ষরিক কোন বৃক্ষ নও,
নও মৎসজাত কোন গান
তবু আজ জলজ বাতাসে
গাছগুলো তার জিহ্বায় তুলেছে রিনরিন
আমি বসে থাকি তার ছায়াসঙ্গীতে
দূর নেত্র ভেঙে ডিঙি ভেসে আসে
ও কার ঘাট থেকে —
খবর জানায় কোনো অদৃষ্ট শহরের
ভাবি — সেকি তোমার শহর?

নিদান

প্রতিটি ব্যথার বিপরীতে থাকে
অস্তিত্ব জাহিরের তীক্ষ্ণপ্রবণতা
যেভাবে বিলুপ্ত প্রাণীদেরও ছিলো
ব্যক্তিগত রাগ, অন্ধ স্নানঘর
অস্তিত্বের সকল প্রতিকূলতায়
আমাদের ভেতর থেকে প্রকাশিত হতে চায়
দীর্ঘবৃষ্টির রাত, তুখোড় বজ্রচাবুক

মধুপুর

শুনেছি— অতীতে এখানে ছিলো বেশ্যাদের ঘর
রিপুতাড়িত মৌমাছিরা মধু নিতে আসতো
এই ঘোর কামিনীফুলের ডেরায়
সেই থেকে পুষ্পখচিত নামটি ছড়িয়েছে
পরাগে পরাগে, মধুকরের ওড়ার কৌশলে
এখনো এখানে কোন ইবাদতখানা নেই
শুধু আছে —
তার অতল চোখের মতো এক নীলজানী
নারীরা স্নান করে জলে
পুরুষেরা হাঁসফাঁস করে কূলে…

শৈবাল নূর: কবি, বাংলাদেশ

পাঠপ্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য
Share.

Comments are closed.