জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
কেমন চারণ?
(মল্লভূমের গর্ব চারণকবি বৈদ্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিবেদিত)
চারণ চারণ কেমন চারণ যেসব কথা বলতে বারণ
সেসব কথাই বলো!
যেসব কালো আলোয় ঢাকা ঝকমকে রং যত্নে রাখা
ভাঙছো খুড়োর কলও।
এ চারণ তো চোখের বালি দুয়ো বলে মারছে তালি
পাপীর মনে ভয় জাগে
মৌচাকেতে ঢিল মেরে যায় কথার বাণে বুকের জ্বালায়
ভণ্ড-কপট দূর ভাগে।
লক আপে দে বাঁধরে ওকে বন্ধ রসদ মরুক শোকে
কবন্ধেরা সঙ্গে শুধু থাক
থাকলে খোলা মারবে বাণ লুটে খাওয়ায় পড়বে টান
বিপদবাধা কারাগারেই যাক।
বেপরোয়া কবিটাকেই ভয় শব্দ দিয়ে মানুষ করে জয়
কলমটা তার বারুদে ভরপুর
শোষণ পীড়ন স্বজনপোষণ গরিব মেরে কুমির তোষণ
শব্দবাণে করেই দেবে দূর।
কবি কেবল প্রতিবাদী নয় মনের বনে ফাগুন কথা কয়
বাউলহাতে একতারাটা বাজে।
বাঁধ-পুকুরের ছলাৎছলে ভাঁট আঁকড় আর ঘেঁটুর ফুলে
মন ভরেছে চৈত্র রাতের সাজে।
লালমাটিতে রাধার কুঞ্জবন নূপুর চেনে চিরপ্রেমিক জন
বিড়াই স্রোতে গল্পটি তার ভাসে
মল্লভূমের মাটি ও জল জানে চারণ চরণ পড়েছে কোনখানে
সৃষ্টিসুখে উদার হৃদয় হাসে।