ঘুমঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে আঁচড়ের দিনলিপি
এক
পাতা কুড়িয়ে, কাগজ কুড়িয়ে একটা গাছের নীচে জড়ো করে। যেকোনো একটা গাছ। দূর থেকে দেখার চিহ্ন দিতে গেলে যেকোনো একটা বড় গাছ বসিয়ে দিলেই হবে। তা সে গাছের নাম যাই হোক, বড় ছোট যার মাথাই পেরিয়ে যাক না কেন—পাতাগুলো ডাঁই হয়ে থাকে। হাওয়া দিলে তাদের আর বাঁচাবে কে ! কিন্তু সেই সময় একটা হাসির আওয়াজ ভেসে আসে। কেউ কেউ বলে সেই লোকটা যে জড়ো করে। আমার কানেও যে এক আধবার আসেনি তা নয়। কিন্তু সেটা হাসি না হাওয়া, আজও ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি। হাওয়া হলে তার ভেসে যাওয়ার দিকে জামার বোতাম খুলে দাঁড়াব। আর হাসি হলে জানতে চাইব, আবার জড়ো হবে কোথা থেকে, কোন সমীকরণে?
দুই
মাঝে মাঝেই আমার নাম ধরে কেউ ডাকে আর সেই সময় একটা পাখি উড়ে যায়। কি পাখি চোখে পড়ে না। কেউ যেন কাছের পুকুরে জল ঘোলা করে দেয়। জল ঘোলার সঙ্গে পাখি উড়ে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক আছে? কিন্তু তা কি করে হয়, পাখি তো আর জলের দিকে সর্বক্ষণ চেয়ে থাকে না। আর থাকলেই বা ওইটুকু ছোট্ট পেটে কয়েক ফোঁটার তো ব্যাপার। জল কাদা পার হয়ে পৌঁছে যেতে বেশিক্ষণ সময় লাগবে না। তাহলে জল ঘুলিয়ে কে পাখি উড়িয়ে দেয়? আর পাখি উড়বেই বা কেন? তাছাড়া জলের নামতায় পাখি কতবার আসে যে মুখ চেনা হয়ে ওড়াউড়ির সম্পর্কে এসে পাক খাবে ! এর মাঝে আবার কোথা থেকে আমার নাম চলে এলো !
তিন
আমরা পায়ে পায়ে অনেকটা পথ হেঁটে এসেছি। যদিও এতে কিছুই প্রমাণ হয় না। কিন্তু তবুও আমরা ঝড় আর জলের ছবিঘরে বেশ কয়েকবার এলোমেলো তুলি চালিয়ে ফেলেছি। কিছু একটা অবশ্যই দাঁড়িয়েছিল কিন্তু আমরা যৌথ সিদ্ধান্তে সেগুলি মুছে ফেলি। আসলে আমরা এসব কিছুই চাইনি। কি চেয়েছি সেটাও আমরা ঠিক বলতে পারব না। তবে কিছু একটা ছবি নিশ্চয়ই উঠে আসছিল। তা না হলে আমরা দুজনেই বেশ কয়েক রাত তা নিয়ে গল্প করার জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছিলাম কেন? আর কেনই বা মাঝরাস্তায় দাঁড় করিয়ে পরস্পরকে আমরা ঝড়ের আভাস দিয়ে জানলা থেকে মুখ নামিয়ে নিই? তবে দু’চারটে বাক্যে গল্প দাঁড় করিয়ে দেওয়ার বেশ কয়েকটি ইচ্ছার সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়ায় বুঝতে পারি ভেঙে যাওয়ার কারণ আসলে সস্তার ফুটপাতে কিছুক্ষণের পায়চারি।
প্রচ্ছদ । রাজিব রায়