তিনটি কবিতা । মারুফ আহমেদ নয়ন

0

আসন্ন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ! আমি বরং তোমাকে ভাবি।
বরফের কফিনে দম বন্ধ লাগে। দূরে গির্জার চূড়া
ঘন পাইনবন তুষারে ঢাকা। ক্রমাগত অধঃপতনে
সাততলা বেয়ে ওয়াচ টাওয়ারে উঠে যাই। জন্মান্ধ
ময়ূরী আমার, তুমি ভালোবাস ঋতুর গান।
তোমার চিবুকের বন্দরে স্থির ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী জাহাজ
আমার দিকে তাক করে রেখেছে পাতার স্নাইপার।
পরিযায়ী পাখিরা উড়াউড়ি করে, যেন মিসাইল বৃষ্টি।
ফুসফুসে ক্যান্সারের পায়রা, তোমার নামে আততায়ী
হয়ে উঠে।
আদিবাসী পাড়ার হাঁড়িয়া ও মাদলের
বাষ্প আর দীর্ঘ সরোবর। যতদূর হেঁটে যাও তুমি
ফেটে পড়ে জলের ফোয়ারা।
জেনো, আমার আর
কিছুই করার নেই—তোমার নাম ধরে ডাকা ছাড়া।

মৃত্যুর পূর্বেও বহুবার মৃত্যু হয়েছে আমার—
তুমি জেনে বিস্মিত হলে। লাভার নদীতে
রাক্ষসীকে এঁকেছে আদিম হাওয়া।
সমুদ্রে সালপসের শিশুরা ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন চিবোচ্ছে।
সংখ্যাতত্ত্ববিদ লিখছেন ধূমকেতু পতনের সন।
কৃষক মন আমার—ঘাসবন চষে করছে বীজ সমীক্ষা।
বাস্কেট স্টারদের স্কুলে আমার নাম কাটা পড়ে যায়।
গারদের জানালায় আকাশ দেখি—
বোয়িং এয়ারক্রাফটের অবতরণ।
মনে পড়ে, ফ্লাইং গানার্ডদের টিফিন ব্রেক শেষে
সবাই রঙিন প্রজাপতির মতো উড়াউড়ি করবে।
আমি ঝাউবনে লুকাব, বাথানে ঘুরতে যাব।

রাখালদের বলব—
‘তোমাদের সঙ্গে নেবে? আমি মহিষ চড়াব
দুগ্ধদোহন করব। বিনিময়ে জেনে নেব
ঘাসের জিনোম রহস্য।’

নিঃসঙ্গ দিন কাটাই। হ্রদের জলে দেখি নিজেকে।
আমার বন্ধুরা সব স্বর্ণকার, আমি একা ধীবর।
পানকৌড়ির গলায় রশি বেঁধে ছেড়েছি সাগরে
তারা ডুবুরির মতো তুলে আনবে সুস্বাদু মাছ।
প্রতিদানে তাদের তৃপ্ত করবো আমিষ রসনায়।
তোমাকে পেতে জেলেপাড়া থেকে চুরি করেছিলাম
রূপার মাছ—তারপর আমার জগৎ বিষাদময় হলো।
তোমার প্রেম আমাকে শিখিয়েছে ভোদড়-নাচ,
কুকুরগুলো ভালোবেসেছে মাংসের বিনিময়ে
বিড়ালগুলো মাছের কাঁটার লোভে।
বিষধর গোখরো স্নেহে গুটিয়ে নিয়েছে ফণা।
তোমার ছায়ার কাছে গিয়ে তন্ময় হয়েছে মন।
তোমার সখীরা ছিল পরিস্থানের শাহজাদী
মনে পড়ে, তুমি আমাকে বংশীবাদক ভেবে
তুচ্ছ করতে।

পাঠপ্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য
Share.

Comments are closed.