ত্রিকালসিদ্ধি
সময়ের পোড়াপোড়া আবছায়া স্মৃতিতে—
ত্রিকালসিদ্ধি হাটে জীবন্ত কাছিম পাশাপাশি সাজানো,
টুকরো টুকরো বিক্রি হবে আটআনা দরে।
একজন বৃদ্ধ কাছিম মাথা পেতে বসে আছে ধারালো ছুরির পাশে—
চোখ দুটি আকাশ অথবা ঈশ্বরের পানে নিবিষ্ট।
সামান্য দূরেই অন্যএক জটলা—
পুঁথিপাঠক হাতেম জ্ঞানী অবসরে ঘুঘু শিকারী,
ইউসুফ-জোলেখার কেচ্ছা পড়ছে প্রেমকুহকে ফাঁদেপড়া মানুষের কাছে।
ত্রিকালসিদ্ধির হিরো নগেন—
একডুবে ধরে আনে পুঠিয়া দিঘির কালবাউশ,
চাঁদের সাথে পাল্লা দিয়ে তাড়ি খায় গলা চুবিয়ে।
নগেন ডোমের একমাত্র মেয়ে রাধা,
যৌবনের ঝড়োহাওয়ায় আমাদের উন্মাতাল আল্পনা।
বৃদ্ধ নগেন হয়তো এখন ত্রিকালের ভগবান—
দেশভাগ অথবা নিশ্চুপ।
চলনবিলের ফিঙেরা
মনের নির্জন আয়নাও কখনো বিভ্রান্ত করে দেয়—
হয়তো ডাকছে অচেনা কুহক তোমায়—
চলনবিলের বিরান দুপুরে দেখো বসে আছে ফিঙে,
বসে আছে আকাশের শরীরে,
তোমার তৃষ্ণায় তাক করে আছে তার নক্ষত্রবিন্দু চোখ।
এখন, না-ঘুম না-জোৎস্নার স্টেশন থেকে ছুটে যাচ্ছে ট্রেন
তুমি ভাবছো কত চিল উড়ে যায় সীমান্ত পেরিয়ে—
তবু, তুমি হেঁটে যাও একান্ত বাসনার কাছে?
তবু, তুমি হেঁটে যাও একান্ত আয়নার কাছে—
তোমার মনোভূমে চলনবিলের ফিঙেরা ওড়ে।
পোড়াদহের স্মৃতিকল্পনায়
দুটি চাঁদ হেঁটে যাবে উড়ন্ত হাওয়া পথ ধরে,
অথবা, পুঠিয়া দীঘির উচ্ছ্বল হাঁসগুলি—
এমনই মনদাগা দৃশ্যের ভেতর,
তুমি— এঁকে দাও কিছু বৃষ্টির ফোঁটা।
আমাদের সময়ের মন অজ্ঞাত ঝড়ের সাথে খেলা করে,
যদিও পথের তৃষ্ণায় আগুন খেতে শিখেছি-
বাসনার পথে হেঁটে হেঁটে।
এখন আরও আগুন খেতে পারি,
পোড়াদহের স্মৃতিকল্পনায়-
মহাভূতচেতনাবিনাশীর সাথে।