জমে ওঠার আসরে
মজমা জমে ওঠে, জমে ওঠে পাখিপুরাণের নিদান
আধুনিক গান, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল গীতি সবই
কোলাহল করে নাচে ফকিরি গানের আসরে,
নাচে লহমায় নারীপুরুষ, ভাটিয়ালি, না মেনে কোভিড
ভাওয়াইয়া গান, সুমি ও আমাদের শ্বেতাঙ্গ জামাই ডেভিড।
মাইজভান্ডারি গানের ঘূর্ণনে পিঠাপুলি, দুধভাত,
স্মৃতি নক্ষত্র কুঞ্জে, সঞ্চারীতে জাগে।
সবকিছুর ভিতরে নদীর পাড় ভেঙে তুমি চলে যাও,
কেবলই মজমার ভিতর থেকে তুমি চলে যাও।
বাবুই পাখির রাফখাতা
পথ সবসময় মাটিতে শুয়ে থাকে না
মাঝেমধ্যে পথ উঠে যায় আকাশের দিকে
আকাশের দিকে উঠে গেলে পথকে আমরা
আর পথ বলি না,
নাম দিই গম্ভীর অয়োময় অট্টালিকা প্রাসাদ
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার
চীনের সাংহাই বাণিজ্য টাওয়ার,
বাবুই পাখিরা অট্টালিকার ফোকর জুড়ে ঘোরে
দিগন্তের নালিতা শাক আর গমের ও ধানের দানা
নসিবে মাখে বাকুম বাকুম নাচের মুদ্রায় তোলে,
বাবুইদের সবক দেয় ওয়াল স্ট্রিট-
দেখো কতো পাকা জমিনে পাকা উঁচু কুলীন দালান
মতিঝিলের দিলকুশার বহুজাতিক সিটি সেন্টার ঢাকা,
অথচ তোমাদের বসতভিটা সামান্য হাওয়ায় নড়বড়
এসো সভ্যতার মহিমা রাত্রির পথে
নিজের ঘর করে নাও অনড় ও সুউচ্চ দালান পাহাড়।
বাবুই বলে, আমার ঘর হাওয়ায় নড়েচড়ে
ঝড়ে ভেঙে পড়ে- এটুকুই আমার গৌরব।
শঙ্কা ও দাপটের মুখে ডাকি দয়ালের নাম, জাপটে
ধরি আমার বন্ধুর ভয়ার্ত পাখা- মরি একসাথে
আবার ভাঙা নড়বড়ে ঘরের খোঁজে নিরুদ্দেশে উড়ি
অপার স্থপতি বাবুই পাখি হাওয়ায় বানায় বাড়ি।।
সাতপুরুষের ঘড়া
শ্যাম অঙ্গে তোলো নারী দ্বিধাকাঞ্চন ভরা
সঙ্গোপনে মেলে ধরো সাতপুরুষের ঘড়া।
পানপাতা মহুয়া নারী চন্দ্রাবতী কলা
ধানদুর্বা বিন্নিনিধির মঙ্গাজল তোলা।
শ্রাবণে সে ঘোরলাগা রহস্য শহর
কোশা নৌকায় ধ্যান করে তোমার নাগর।
অনিয়ম পায়ে এসো মৎস্যগন্ধা মায়া
নুন্নির মূলে খাড়া ভাটি গাঙ্গের নাইয়া।
নিদারুণে আশা এই লগ্নির ভাগ লৈয়ো
শস্যবতী হাতের কড়ি দুঃখসমান আয়ু।
আকালের হাওয়া বসে বিরান খামার
আনো ঘরে দুধভাত কিষাণী আমার।।