দ্বিচরণের দ্যুতি
নতুন কুঁড়িগুলো যেন বেশিরকম লাজুক এবার!
বাতাসে ভেসে থাকা বিষাদের নিশ্বাসে যেন
মৃত্যু চোখ রাঙায়
দাঁত খিঁচোয়
মাংসপেশি ফুলিয়ে ক্যাডারদের মাস্তানী দেখায়
চোখে মাস্ক পরে ওরাও বলদর্পী ভাইরাস ঠেকায়।
২.খিদে পেলেই পথের বিড়ালেরা অতিথি মহাশয়।
সারাদিন শংকিত সচকিত একেবারেই শব্দহীন
হুটোপুটি নেই
খেলাধুলা নেই
তাদের প্রজন্ম বিকাশশিল্প বাড়ে উর্ধ্বহারে যথার্থ
মহামারি ঘটালো মানব জীবনে অযথাই অনর্থ।
অনাহারী মন
হুড়মুড় করে কি সবকিছু ভেঙে পড়বে এবার?
সব – সব – সব দৃশ্যপট?
খুলে যাবে আকাশের সকল কলকব্জা অকস্মাৎ
পাথর হয়ে যাবে উড়ে চলা শুভ্র মেঘদল
নদী আর সমুদ্র হঠাৎ হয়ে যাবে নিশ্চিহ্ন
পাহাড়-পর্বত হয়ে যাবে ধূ ধূ ধূলোর সাহারা?
তুমি হৃদয় দুয়ার খুলে গানের হাওয়া নেবে
তেমন কোন চাঁদমারি রাতের দেখা নেই চরাচরে
করতলে পুরে নেবে কাঙ্খিত কোন স্বপ্নিল হাত
তার কোন ফুরসুত নেই তোমার আমার
শুধু বোমারু বিমানগুলো টন টন ঘৃণা দিয়ে
ভরে দিচ্ছে মানুষের ভালোবাসার সকল জমিন।
কেমন মরিয়া হয়ে উঠেছে দেখো কালের নৃত্য
ভুত ভবিষ্যতের সমুদয় তান্ডব বুঝি সমাসন্ন
ভূগ্রহের পাঁজরে বেজে চলেছে ক্রোধের স্রোত
মারী মড়ক আর মৃত্যুর উৎসবে মেতেছে সবাই
বারুদ আর ধোঁয়া
রক্ত আর আর্তি চুষে নেয় আরাধ্য সব মুখরতা।
পৃথিবীর নাভিমূল থেকে উৎসারিত লক্ষ কোটি
লকলকে মৃত্যুবীজ মেতেছে আজ উল্লাসনৃত্যে
লেলিহান লোভ আর ঘৃণার মহোৎসবে যাচ্ছে পুড়ে
সহস্রকাল ধরে অর্জিত সকল শিলালিপি
আকন্ঠ ডুবে যাওয়া হাহাকারের আর্তনাদ নিয়ে তবু
জেগে থাকে বিহবল মানুষের অনাহারী মন।
হাহাকারই পৃথিবীর একমাত্র অর্জন
খুব হুল্লোড় বেড়ে যাচ্ছে এখন!
ঘরে বাইরে মুখোমুখি হলেই কর্কশ হচ্ছে কন্ঠস্বর!
সবকিছুতেই বড্ড তালগোল পেকে যাচ্ছে
সবকিছুই কেমন যেন তাতানো আর শানানো
হাত ফসকে যাচ্ছে সবকিছু, মেজাজটাও-
উসকে উঠছে রক্তে ঢেউ।
বাতাসে এখন হুস হুস করে বিষ!
কাতর ফুসফুসগুলো অরক্ষিত শুধু কাতরায়!
ঠোঁটগুলো ছোঁয়াহীন শ্যাওলাময় আর চটচটে
আলিঙ্গন ভুলেছে উষ্ণতার সহজ সরল ব্যাকরণ
লোবানের গন্ধে নিষিদ্ধ হয়েছে গোলাপচর্চা-
শুনছে না কাউকেই কেউ।
আচানক মারমুখী ভূগর্ভের জ্বালামুখ!
টন টন লাভায় পুড়ে মানুষ আদিম পাথর!
সাগর মহাসাগর জোট বেঁধে দিচ্ছে হানা কূলে
বাতাসে হুস হুস ছুটছে ভয়ানক হন্তারক দল
রু² খটখটে হয়ে গেছে বৃক্ষের ছায়াশীতলতা
তুমিও ভুলে বসেছো আলিঙ্গন।
মানুষ এমনই কি- শুধুই এক দঙ্গল!
অতলান্ত আলোর ফোয়ারা কেমন হিমশীতল!
যাবতীয় নিষিদ্ধ উল্লাস কারামুক্ত বিহঙ্গ এখন
আমাদের ঠোঁটে জমে আছে পান্ডুর শীতের ছায়া
দেহের পরতে পরতে জংধরা শেকলের কাতরানি
হাহাকারই পৃথিবীর একমাত্র অর্জন।
সঙ্গতি-অসঙ্গতি
(কবি শহীদ কাদরীর কবিতা ”সঙ্গতি”র অনুরণনে)
আকাশ খেলার সঙ্গী সূর্যকে পাবে
মেঘ পাবে আকুলি-বিকুলি বৃষ্টির সোহাগ
মৃত্তিকা পাবে সবুজের সতেজ ঘ্রান
বাঁধভাঙা বেনোজল পাবে গৃহস্থের বসত
তুমি খুঁজবে নিখাদ ভালোবাসা
পাবে না, কোথাও পাবে না।
বেনারসি সাজাবে স্বপ্ন বাসর সালঙ্কারে
ধূপধুনো আতশবাজি তুলবে আনন্দ ঝংকার
চাপাহাসি বিলাবে আনন্দের লহরী
কোলাহলে থমকে যাবে বেদনার্ত হাহাকার
তুমি খুঁজবে ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে
পাবে না, কোথাও পাবে না।
রাজপথ পাবে ডিজিটাল গতি সীমাহীন
দারিদ্র্য ঢেকে যাবে হিরন্ময় কোলাহলে
রুনী সাগর তনুরা অনায়োসে হবে ইতিহাস
গুরুর চাপে লঘুদের লয়প্রাপ্তি সুনিশ্চিত
দিশেহারা তুমি খুঁজবে স্বস্তি শান্তি
পাবে না, কোথাও পাবে না।